বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের সাবেক ইউপি সদস্য সঞ্জয় চন্দ্রকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে এমপি পঙ্কজ দেবনাথসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। রোববার বরিশাল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে কাজীরহাটের বিদ্যানন্দপুরের ৫ নম্বর পূর্ব রতনপুরের সাবেক ইউপি সদস্য সঞ্জয় চন্দ্র বাদী হয়ে এ মামলা করেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক গোলাম ফারুক মামলাটি আমলে নিয়ে মেহেন্দিগঞ্জের সার্কেল এসপিকে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এই মামলার অপর আসামিরা হলেন, চরহোগলা এলাকার জাকির হোসেনের পুত্র আমু, হারুন বেপারীর ছেলে সোহাগ বেপারী ও হারুন খন্দকারের ছেলে রিমন খন্দকারসহ অজ্ঞাত আরও তিন জন।
আদালত সূত্র অভিযোগের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, সঞ্জয় এমপি পঙ্কজ নাথের ছোট ভাই ও তার স্ত্রীসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা করেন। এতে আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে সঞ্জয়কে বিভিন্ন সময় খুন ও গুমের হুমকি দিয়ে আসছে। এ ঘটনায় সঞ্জয় চন্দ্র বাদী হয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন।
এতে এমপি পঙ্কজ নাথ আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১২ই জুন রাত ১১টায় আমু, সোহাগ বেপারী, রিমনসহ তিন-চারজনকে পাঠান সঞ্জয়কে নিতে। সঞ্জয় না যেতে চাইলে জোর করে মেহেন্দীগঞ্জ ডাকবাংলায় নিয়ে যায়।
সেখানে এমপি পঙ্কজ নাথ সঞ্জয়কে বলেন, দুদকের মামলার কী করবি? এ কথার সঙ্গে সঙ্গে অন্য আসামিরা তাকে মারধর করতে থাকেন। এ সময় পঙ্কজ নাথ তাকে চড়থাপ্পড়, লাথি এবং পা দিয়ে সঞ্জয়ের মুখ চেপে ধরে। পরে আসামিদের নির্দেশ দেয় সঞ্জয়ের হাত-পা ভেঙে নদীতে ফেলে দেয়ার। যাতে সে আর সাঁতার কেটে না উঠতে পারে। এরপর বাদীকে আসামিরা এলোপাতাড়ি মারধর করে। পরে সঞ্জয় অজ্ঞান হওয়ার ভান ধরে থাকেন।
আসামিরা রাত সাড়ে ১২টার দিকে মাঝকাটা নদীতে ফেলে দেয় সঞ্জয়কে। এরপরে অন্যান্য সাক্ষীরা বাদীকে খোঁজাখুঁজি করে নদীর তীরে খুঁজে পায়। পর দিন বাদীকে মেহেন্দিগঞ্জ স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিয়ে যাওয়ার জন্য রওনা হলে আসামিরা যেতে বাধা দেয়। হাতুড়ে ডাক্তারের চিকিৎসা নেয় সঞ্জয়।
পরে বিষয়টি বরিশালের পুলিশ সুপারকে জানালে তিনি কাজীরহাট থানার ওসিকে সঞ্জয়ের চিকিৎসার ব্যাপারে সহযোগিতা করার জন্য নির্দেশ দেন। এরপরে পুলিশের সহযোগিতায় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে গত ১৭ই জুন ভর্তি হন সঞ্জয়। কিছুটা সুস্থ্য হয়ে রোববার তিনি আদালতে মামলাটি করেন।’